পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজের
শিক্ষকদের পর এবার নতুন বেতন কাঠামোয় বৈষম্য দূরীকরণের দাবিতে আন্দোলনে
নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের
শিক্ষকরা। তারা বেতন বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে তিনটি ইস্যু সামনে আনতে চান।
এগুলো হচ্ছে টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল এবং স্বতন্ত্র বেতন স্কেল
চালু। এসব দাবি আদায়ে আপাতত রাজধানী ও ঢাকার বাইরে মানববন্ধন ও অবস্থান
কর্মসূচি পালন করার চিন্তাভাবনা চলছে। প্রয়োজনে হাইকোর্টে রিটও করতে পারেন।
তবে আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপরেখার সিদ্ধান্ত হবে সারা দেশের চিকিৎসকদের
শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) কার্যনির্বাহী
কমিটির সভায়। বিএমএ’র বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট
হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা.
কামরুল হাসান জানান, দুয়েক দিনের মধ্যেই বিএমএ’র এ সভা ডাকা হতে পারে। ওই
সভায় আন্দোলনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি মেডিক্যাল
শিক্ষকদের এই আন্দোলনের ব্যাপারে বিএমএ নেতাদের আগ্রহী করতে বেশ চেষ্টা
চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে বিএমএ ছাড়াও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বেশ কয়েকজন
শিক্ষকও আন্দোলনের ব্যাপারে তৎপর হয়ে উঠেছেন। তারা বিএমএ’র পাশাপাশি সারা
দেশের সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের শিক্ষকদের নিয়ে
সমন্বিত মেডিক্যাল শিক্ষক পরিষদ গঠন করে আন্দোলনে নামার উদ্যোগ নিচ্ছেন। এ
তৎপরতায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক সমিতির
সভাপতি ও নাক-কান-গলা রোগ বিভাগের অধ্যাপক ডা. আবু ইউসুফ ফকির, সহসভাপতি ও
মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. টিটো মিয়াসহ ৪-৫ জন শিক্ষক। তারা জানান,
অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ চলছে। খুব
শিগগিরই বৈঠক করে আন্দোলনের কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে। মেডিক্যাল শিক্ষকরা
বলছেন, বিশ্বের মধ্যে সব থেকে কঠিন মেডিক্যাল শিক্ষা। ৫ বছর মেয়াদি
এমবিবিএস পরীক্ষা পাস করা যেমন কঠিন, তেমনি পাস করার আগে কোর্স চলাকালীন
আইটেম, কার্ড, টার্মসহ বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা দিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের
মাথার ঘাম পায়ে ঝরে। এরপর এমবিবিএস পাস করে অন্য ক্যাডারের মতোই তাদেরও
বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েই তবে সরকারি ডাক্তার এবং পরে পদোন্নতি
পেতে পেতে অধ্যাপক হতে হচ্ছে। একই সঙ্গে রাত-দিন কঠোর পরিশ্রম করে সরকারি
হাসপাতালগুলোয় রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। তাছাড়াও ডাক্তার হওয়ার জন্য সরকারি
মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস ভর্তির সুযোগ পাওয়া তো সোনার হরিণ ধরার মতোই। এত
কাঠখড় পোড়ানোর পরও নতুন বেতন কাঠামোয় মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপককে রাখা
হয়েছে থার্ড গ্রেডে। আর সচিবরা রয়েছেন ফার্স্ট গ্রেডে। কেন এই বৈষম্য?
সচিবদের থেকে কোন দিক থেকে মেডিক্যাল শিক্ষকরা অযোগ্য? তারা প্রশ্ন রাখেন
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও কি তাদের থেকে অধিক যোগ্যতাসম্পন্ন?
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দাবি যদি ন্যায্য হয়, তাহলে তাদের দাবি
ন্যায্য হবে না কেন?
সুত্রঃ আমাদের সময়